সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ তার সঙ্গীদের ওপর হামলার সময় থেকে গায়েব ওই ভবনের সিসিটিভির ফুটেজ উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
মঙ্গলবার অভিভাবক ও নাগরিক সমাজের একটি প্রতিনিধি দল সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের একথা জানান তিনি।
রোববার ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হকের কক্ষে হামলা ও ভাংচুর চালান ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। এতে নুরুলসহ অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন।
হামলাকারীরা যাওয়ার সময় ডাকসু ভবনের সিসি ক্যামেরার ধারণ করা চিত্র যে কম্পিউটারে ছিল, তার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য।
উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিক সমাজ ব্যানারে মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্মারকলিপি দেয়ার সময় কয়েকটি প্রশ্নও তোলা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজ জনসমক্ষে কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না- সেই প্রশ্ন তোলা হলে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বের করার জন্য পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।
এতে বলা হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কতিপয় শিক্ষার্থীদের মা-বাবা, অভিভাবক, প্রাক্তন ছাত্র, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, আইনজীবী তথা রাষ্ট্রের কর প্রদানকারী নাগরিকরা উদ্বেগের সঙ্গে বেশ কিছুদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীরা হরহামেশাই বিভিন্ন প্রকার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
‘কিন্তু তারা আপনার কাছ থেকে কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। আপনার পক্ষপাতমূলক, অমানবিক আচরণে আমরা হতবাক, বিমর্ষ এবং উদ্বিগ্ন। আপনার এই আচরণ অপরাধীদের অপরাধ করতে ধারাবাহিকভাবে উসকানি দিচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’
স্মারকলিপিতে আরও জানানো হয়, সম্প্রতি বিশ্ববদ্যালয়ের ইতিহাসের সব নজির ভঙ্গ করে ডাকসু ভবনের ভেতরে ঢুকে আলো নিভিয়ে ডাকসুর ভিপিসহ অন্তত ৩০ জন ছাত্রকর্মীকে এমন নৃশংস কায়দায় মারধর করা হয়েছে, যার পরিণতিতে অন্তত দুজন ছাত্র এখনও আইসিইউতে।
‘আক্রান্ত ছাত্ররা আপনার প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়ে বহিষ্কারের হুমকির শিকার হয়েছেন। অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, আপনি তার একটারও সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করেছেন বলে আমরা দেখতে পাইনি।’
ভিসি প্রতিনিধি দলকে বলেন, আপনাদের এই বার্তা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সহায়তা করবে। অভিভাবকরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আপনাদের কথা শোনা আমাদের প্রয়োজন। একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, যেটি প্রত্যাশিত ছিল না। যারা অপরাধী তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবার জায়গা থেকে যেন দায়িত্বশীল আচরণ করি। আমরা যেন নিয়মনীতি ও মূল্যবোধের মধ্যে থাকি।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন শিল্পী শহীদুল আলম, আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজীমউদ্দিন খান, রুশাদ ফরিদী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।